প্রকাশিত: ১০/১২/২০১৯ ৫:৩০ পিএম

গণহত্যা সহ রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো সব ধরনের নির্যাতন ও নিপীড়নের কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচি’কে আহ্বান জানিয়েছেন শান্তিতে সাত নোবেলজয়ী। এছাড়া এই গণহত্যার জন্য সুচি ও মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।
নেদারল্যান্ডসে’র হেগে শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ‘ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)‘ –এ রোহিঙ্গা গণহত্যা ও নিপীড়নের ঘটনায় পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা মামলার শুনানি শুরু হয়েছে।

এই মামলাকে ঘিরেই মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে নিজেদের অপরাধ শিকারের এ আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে আমরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত হওয়া গণহত্যাসহ অপরাধগুলো প্রকাশ্যে স্বীকার করার জন্য নোবেলজয়ী অং সান সু চির প্রতি আহ্বান জানাই। আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে, এই নৃশসংসতায় নিন্দা জানানোর পরিবর্তে সেটা অস্বীকার করেছেন সুচি।

এর আগে রোহিঙ্গাদের প্রতি নৃশংসতার অভিযোগে চলতি বছরের নভেম্বরে ইসলামিক সংস্থা ওআইসি’র পক্ষ থেকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।

আন্তর্জাতিক আদালতে ৪৬ পৃষ্ঠার এক অভিযোগপত্র দেয় দেশটি। সেখানে তারা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে জোরপূর্বক উচ্ছেদের অভিযোগ আনে।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এই ধারাবাহিক শুনানি বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে। মিয়ানমার ও গাম্বিয়া দুই দেশের প্রতিনিধি দলই এতে অংশ নেবেন। মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি।

প্রকাশিত বিবৃতিতে ওই সাত নোবেলজয়ী বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর ঘটনায় মিয়ানমারকে দায়ী করার জন্য এই পদক্ষেপ গ্রহণে আমরা গাম্বিয়ার প্রশংসা করি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শান্তির মানুষ হিসেবে আমরা রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নিয়মতান্ত্রিক বৈষম্য মোকাবিলা ও রোহিঙ্গাদের জাতীয়তা, ভূমির মালিকানা, আন্দোলনের স্বাধীনতা এবং অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই। আমরা সু চিকে নৈতিক দায়িত্ব পালনের এবং তার নজরদারির অধীনে সংঘটিত গণহত্যার স্বীকৃতি ও নিন্দা জানাতে অনুরোধ করছি।

বিবৃতিতে সই করেছেন, শান্তিতে নোবেলজয়ী ইরানের শিরিন ইবাদি, লাইবেরিয়ার লেমাহ গবোই, ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কার্মান, উত্তর আয়ারল্যান্ডের মাইরেড মাগুয়ের, গুয়েতেমালার রিগোবার্টা মেনচ তুম, যুক্তরাষ্ট্রের জোডি উইলিয়ামস ও ভারতের কৈলাশ সত্যার্থী।

রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচারের মুখে ২০১৭ সালের আগস্টে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। এরও আগে থেকে কয়েক ধাপে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।

তবে ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী যে অভিযান চালায় সেটাকে ‘জাতিগত নিধন’ ও ‘হত্যাযজ্ঞ’ আখ্যা দেয় জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বেশকিছু আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা।

পাঠকের মতামত

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য ‘সুখবর’ দিল মালয়েশিয়া সরকার

মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশ ওভারসিস এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য নতুন ...

ভারতে আশ্রিত আওয়ামী নেতাদের নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন মমতা, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়ার হুঁশিয়ারি

বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ...

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্যাতন করছে আরাকান আর্মি: এইচআরডব্লিউ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর দমনমূলক নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে জাতিগত ...

রয়টার্সের প্রতিবেদনমিয়ানমারের বিরল খনিজে নজর যুক্তরাষ্ট্রের, বিদ্রোহীদের পক্ষে টানছে ট্রাম্প প্রশাসন

মিয়ানমারের বিরল খনিজ সম্পদের দিকে চোখ পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। মিয়ানমারের বিরল খনিজে চীনের কর্তৃত্ব সরিয়ে নিতে ...

মিয়ানমার জান্তা ঘনিষ্ঠদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

মিয়ানমারের সামরিক জান্তাঘনিষ্ঠ চার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন অর্থ ...